সহজে ঘর সাজান, এই ৭টি ইন্ডোর প্লান্ট দিয়ে

ঘর সাজাতে ইন্ডোর প্লান্টের জুড়ি মেলা ভার। আসবাব যেমনই হোক, ঘরের এক কোনে একটি গাছ রাখুন- শোভা বাড়বে। আসলে গাছই তো সবচেয়ে সুন্দর শিল্পকলা।

তবে শুধু শোভা বৃদ্ধিই নয়, ঘরে গাছ রাখলে মুডও থাকবে ভাল। বিশেষ করে শহরের ফ্ল্যাটবাড়িতে প্রকৃতিকে অনেকেই মিস করেন। সেখানে একটি গাছের ছোঁয়াই সুন্দর করে তুলবে আপনার দিন।

ইন্ডোর প্লান্ট নিয়ে অনেকেই ভয় পান। প্রথমেই ভাবেন অনেক দাম হবে। তারপর ভাবেন যে ভীষণ যত্ন করতে হবে। তবে এমনটা কিন্তু একেবারেই নয়।

এই লিস্টে পাবেন ৭টি সবচেয়ে সহজ ইন্ডোর প্লান্টের উদাহরণ। একটি বাদে সবকটিই ডাল কেটে পুঁতলেই হয়। আর বেশি যত্নেরও প্রয়োজন নেই।

খালি মনে রাখা প্রয়োজন যে ইন্ডোর প্লান্ট হলেও গাছের সালোকসংশ্লেষের জন্য আলো প্রয়োজন। তাই চেষ্টা করুন দক্ষিণ, পূর্ব বা পশ্চিমের রোদ আসে এমন জানলার পাশে রাখার।

তাছাড়া একই জাতের দুটি টব করুন। একটি বারান্দায় রাখুন। একটি ঘরে। ঘরে একটানা ৩ দিন পর দুটি গাছের স্থান অদলবদল করে নিন। বাইরের রোদ-আলো পেলে গাছের বৃদ্ধি ভাল হবে। পাতার উপরের ধুলোর আস্তরণ মাঝে মাঝে পানি দিয়ে ধুয়ে দেবেন। গাছ সতেজ থাকবে।

মাটি শুকিয়ে গেলে তবেই পানি দিন। অতিরিক্ত পানি দেবেন না। আবার গাছ নেতিয়ে পড়া পর্যন্তও অপেক্ষা করবেন না।

কোথাও বেড়াতে গেলে ১ সপ্তাহের জন্য খুব ভয়ের কিছু নেই। যাওয়ার আগে ভাল করে পানি দিয়ে যাবেন। সরাসরি রোদে রাখবেন না। অল্প আলোয়, বারান্দায় রাখবেন। আর বাড়ি ফিরেই পানি দিয়ে দেবেন।

ইন্ডোর প্লান্টের জন্য খুব বেশি কিছু সারের প্রয়োজন নেই। তবে মাঝে মাঝে বাজারচলতি কোনও সার দিতে পারেন। পরিমাণে সামান্য দেবেন। নয় তো পাতা জ্বলে যাবে।

যে কেউ করতে পারবেন এমন ৭টি ইন্ডোর প্লান্ট :

১. মানি প্লান্ট (Money Plant/ Pothos)

হয় তো ভাবছেন এ আর এমন কী গাছ! আসলে সেই জন্যই এই নাম রাখা। কারণ মানি প্লান্ট করা বেশ সহজ। আর ঠিকভাবে যত্ন নিলে মানি প্লান্টের সৌন্দর্য্য অনেক দামি গাছকেও হার মানায়।

বিভিন্নভাবে করতে পারেন মানিপ্লান্ট। ছোট টবে করে বারান্দায় হ্যাঙ্গিং প্লান্ট হিসাবে করতে পারেন। আবার বড় টবের মাঝে একটি লাঠি পুঁতে নিতে পারেন। সেটি বেয়ে বেয়ে মানিপ্লান্ট বাড়বে। আবার ছোট বাহারি টবেও করতে পারেন। বুক সেলফ বা টেবিলের এক কোনে রাখবেন।

একটু খোঁজ নিলেই কোনও বাগানপ্রেমী বন্ধুর থেকে কাটিং পাবেন।

বসানোর সময়ে মাঝারি টবে অন্তত ৭-৮টি কাটিং বসাবেন। আর মাঝে মাঝে ট্রিমিং করবেন। ঘন হবে।

২. সানসাভেরিয়া (Sansaveria)

ইদানিং ইন্টিরিয়র ডেকরেশনের বাজারে খুব জনপ্রিয় সানসাভেরিয়া। Mother-in-Law’s Tounge নামেও পরিচিত। খুবই হার্ডি গাছ। এক সপ্তাহ পানি দিতে ভুলে গেলেও কোনও সমস্যা নেই। আর বেশ অন্যরকম দেখতে।

বিভিন্ন জাতের সানসাভেরিয়া হয়। হলুদ বর্ডার, কালচে সবুজ পাতার গাছটি সাদা বা লাল টবে সত্যিই খুব সুন্দর দেখায়।

গোড়া থেকে চারা বের হয়। সেটা তুলে বসালেই গাছ হবে। অনেকে গোটা পাতা কেটে বসান। তবে সেটায় অনেক সময় লাগে।

৩. ড্রাসিনা (Dracena)

এই গাছটি অনেকেই বাগানে করেন। ইন্ডোর প্লান্ট হিসাবেও বেশ ভাল। তবে মাটি বেশিদিন যাতে শুকিয়ে না যায় সেদিকে নজর রাখবেন। মাটি শুকিয়ে গেলে পাতা ঝড়ে যায়। তবে, পানি দিলেই আবার সতেজ হয়ে ওঠে।

ডাল কেটে মাটিতে পুঁতে দিলেই নতুন গাছ হবে। গাছের প্রধান ডাল কেটে দিলেই নতুন শাখা বের হয়।

৪. এরিকা পাম (Erica Palm)

বাংলাদেশে যদি সবচেয়ে জনপ্রিয় ইন্ডোর প্লান্টের তালিকা করা হয়, তার মধ্যে প্রথম দশে অবশ্যই এরিকা পামের নাম থাকবে।

যে কোনও নার্সারিতেই পাবেন এরিকা পাম। দামও খুব বেশি নয়। খুব বেশি যত্নেরও প্রয়োজন নেই। টবে পানি না বসলেই হল।

তবে অন্যান্যগুলির তুলনায় এটি একটু বেশি রোজ পছন্দ করেন। তাই জানলার ধারে বা বারান্দায় রাখলে সবচেয়ে ভাল। অথবা সপ্তাহে ২ দিন ঘরে রেখে বাকি ৫ দিন বারান্দা বা বাগানে রাখতে পারেন।

এই গাছটি যেহেতু একটু লম্বা হয়, তাই খাট বা সোফার পাশে, ঘরের এক কোনে দেখতে বেশ সুন্দর লাগে।

৫. মনস্টেরা (Monstera)

২০২০-২১-এ সবচেয়ে জনপ্রিয় ইন্ডোর প্লান্ট কী জানেন? মনস্টেরা। বড় বড় পাতার এই গাছ এখন ইন্টিরিয়ার ডিজাইনারদের প্রথম পছন্দ।

মানিপ্লান্টের মতো ডাল কেটে বসালেই এই গাছ হয়। বাগানপ্রেমী কাউকে ছবি পাঠিয়ে জিজ্ঞাসা করতে পারেন এর বিষয়ে। কাটিং পেয়ে যাবেন।

কাটিং বসানোর পর কয়েকদিন ছায়ায় রাখবেন। মাটি ভিজে ভিজে রাখবেন।

তবে মনস্টেরা বড় হতে একটু সময় লাগে। প্রথম ৫-৬টা পাতায় কোনও বিন্যাস বা নকশা থাকে না। একটু বড় হলে তখন দেখা যায় তার আসল রূপ। তাই একটু ধৈর্য্য ধরতে হবে।

৬. কোলিয়াস (Coleus)

সবুজ বাদ দিয়ে একটু অন্যরকম রঙ চাই? তাহলে তাহলে এটাই সেরা চয়েস।

ডাল কেটে বসালেই হবে। তবে একটা টবে ৪-৫ টি অন্তত কাটিং বসাবেন। নিয়মিত পানি দিলেই গাছ ধরে যাবে।

কোলিয়াসের ক্ষেত্রে নিয়মিত ডগা ছাঁটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তবেই গাছ ঘন ও সুন্দর হবে। ডগার পাতা না ছাঁটলে গাছ বেশি লম্বা হয়ে যাবে। পাতার সংখ্যাও কম হবে।

এই গাছের ডাল খুব নরম। তাই একটু সাবধানে হ্যান্ডেল করতে হয়। গোড়ায় যাতে পানি না বসে সেদিকে নজর রাখতে হবে।

৭. রবার প্লান্ট (Rubber Plant)


ইন্ডোর প্লান্ট হিসাবে রাবার প্লান্টের জনপ্রিয়তা নতুন নয়। একটু বড় ঘর হলে ও প্রচুর আলো বাতাস থাকলে এই গাছ পারফেক্ট। বারান্দাতেও করতে পারেন। খুবই হার্ডি গাছ। 

ডাল কেটে বসালেও হয়। তবে নার্সারি থেকে একটু হরমোন পাউডার কিনে নেবেন। সেটি ডালের কাটা স্থানে লাগিয়ে বসাবেন। মাটি অল্প ভিজে রাখবেন।

রবার গাছের বিভিন্ন ভ্যারাইটি হয়। কালচে পাতা, লাল দাগসহ পাতা ইত্যাদি।

উপরের লিস্টের কোন গাছ আপনার বাড়িতে আছে? কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আর কাটিংয়ের আবদারটাও তাড়াতাড়ি সেরে ফেলুন। বাগানপ্রেমী বন্ধু বা আত্মীয়র সঙ্গে শেয়ার করুন ।

আমরা এই গাছ গুলো বিক্রি করছিনা এখনো । অনেকেই আমাদের কাছে জানতে চান তাদের জন্য আমাদের এই পোস্ট । 

বেড রুমের জন্য সেরা ৫ টি রঙ

বেড রুমের জন্য সঠিক রঙ নির্বাচন করা সত্যি খুব কষ্ট দায়ক একটা কাজ । হাজার হাজার রঙের ভিড়ে আমার জন্য কোনটা পারফেক্ট হবে সেটা খুঁজে বের করা আরো কষ্ট সাধ্য । আপনার আমার এই সমস্যা কে সমাধান করার জন্য আজ আমরা নিয়ে এসেছি ৫ টি সেরা ৫ টি কালার যা আপনার ঘর কে অন্য মাত্রায় নিয়ে যেতে সক্ষম । 

রঙের নামঃ Aluminium , কোডঃ 8337 , ব্রান্ডঃ এশিয়ান পেইন্টস 

এই  রঙটি আপনার বেডরুমে একটা শান্তি ভাইব নিয়ে আসবে এবং মিনিমালিজম যোগ করতে সক্ষম। এটি একটি হালকা রঙ, যা একটি আধুনিক পরিবেশ তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে এবং চোখের শান্তি হিসেবেও এই কালার টি একই ভাবে কাজ করে । আপনি যদি শান্তি প্রিয় সাধারণ মানুষ এবং সাধারণ জিনিস পত্র পছন্দ করেন তাহলে এই রঙ আপনার জন্য পারফেক্ট । 

Color Name: Oyster Grey
Code: 8473
Brand: Asian Paints
Color Name:  Aluminium
Code: 8337
Brand: Asian Paints

আয়নায় সাজুক অন্দর

কথায় বলে মনের আয়নায় ভেসে ওঠে আপনার আত্মার প্রতিচ্ছবি, সেটা নাকি চোখের ভাষায় ফুটে ওঠে। আয়নায় শুধু আমরা নিজের চেহারার প্রতিচ্ছবি না, আত্মার প্রতিফলনও দেখতে পাই আর তাই হয়ত আয়না থেকে চোখ ফিরিয়ে নেওয়া স্বভাবতই কঠিন। আয়না আপনাকে মনে করিয়ে দেয় আপনি কতটা সুন্দর, কতটা প্রিয় নিজের কাছে, কতটা ভালো আপনি নিজেকে বাসতে পারেন। ঘরময় আয়না তাই  হয়ে উঠতে পারে আপনার নিজস্বতা প্রকাশের ভঙ্গি, আয়না দিয়ে নানা ভাবে দেয়াল সাজিয়ে ঘরকে আপনি দিতে পারেন ব্যক্তিত্বের অন্য মাত্রা। 

কোথায় সাজাবেন আয়না? 

 ঘরের ঠিক কোন কোন কোণায় আয়না থাকবে সেটা নির্ভর করবে আপনার ঘরের অন্যান্য আসবাবপত্র ও দেয়ালের উচ্চতার উপরে। এমন কিছুর বিপরীতে আয়নার স্থান নির্ধারন করা উচিৎ যেটা চোখের সৌন্দর্য বর্ধন করে। যে কোন পেইন্টিং যেমন আই-লেভেলে রাখলে তা আকর্ষন ধরে রাখে, তেমনি আয়নার ক্ষেত্রেও চোখের দৃষ্টির বিবেচনায় স্থান নির্ধারন যথাযথ হওয়া উচিৎ। তবে আয়নার সর্বদা উদ্দেশ্য শুধু মাত্র মানুষের প্রতিচ্ছবি’র প্রতিফল না, তাই ঘরের অন্যান্য অনেক কিছুর সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য আয়নার স্থান নির্ধারন ভিন্ন হতে পারে। 

বড় আয়নায় সাজুক ঘরঃ 

আপনার ঘরের আয়তন চিন্তা করে যে দেয়ালে আয়না বসাতে হবে ব্যাপারটা তেমন না। অনেক ধরনের এক্সপেরিমেন্টের সুযোগ আছে যা আপনি আয়নার মাধ্যমে করতে পারেন। ছোট ঘরে বড় আয়না, চোখের দৃষ্টিতে ঘরের পরিধিও বড় করে দেয়। সিলিং-এ আয়না সব সময় ছাদের উচ্চতা বাড়িয়ে দেয়, ঘরকে প্রশস্ত মনে হয়। 

ফোকাল পয়েন্টে আয়নার অবস্থানঃ 

ঘরের লাইটিং সাধারণত ফোকাল পয়েন্টের অবস্থান অনুযায়ী করা হয়। ঘরের সব দিকে আলো ছড়িয়ে পড়ার জন্যই এই ব্যাপারটি মাথায় রাখা হয়। আয়নার ক্ষেত্রেও ফোকাল পয়েন্ট ব্যবহার করা যেতে পারে। ঘরের আলো আর আয়না মিলেমিশে এক ধরনের ইলিউশন তৈরি করতে পারে। ডাইনিং আর ড্রয়িং রুমের ক্ষেত্রে এই টেকনিকটা বেশি ব্যবহার করা হয়। 

ছোট ছোট আয়নায় সৌন্দর্য বর্ধনঃ 

ফটোফ্রেমের দেয়ালের মত, আপনি সাজাতে পারেন আপনার একান্ত নিজস্ব আয়নার দেয়াল। আয়না গুলো নানা সাইজের এবং ধরনের হতে পারে, ছোট ছোট নানা ধরনের আয়না এখানে নিজের পছন্দ মত ব্যবহার করা যাবে। সাজানোর ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে দেয়ালের কোন উচ্চতা থেকে আয়নার প্লেসমেন্ট শুরু হবে এবং কম্পোজিশন অনুযায়ী কোথায় শেষ হবে। 

ফার্নিচারে আয়নার সংযোজনঃ 

আপনার ওয়ারড্রব, আলমারি, শো-কেইসে খুব সহজেই আয়নার সংযোজন করা সম্ভব। শুধু দেয়লে বা ড্রেইসিং টেবিলে আয়নার ব্যবহার না করে আপনার পছন্দের ডিজাইনের যে কোন ফার্নিচারে আয়নার সংযোগ ঘটানো যায়, এতে ফার্নিচারটি যেমন অন্যমাত্রা পায় তেমনি সাধ্য ও শখ-ও পূরণ হয়।  

স্মৃতির সাথে মুহূর্তের বন্ধনঃ 

 ঘরের দেয়ালের ছবির ফ্রেমের মাঝ বরাবর একটি আয়না সাজালে এক চমৎকার মেলবন্ধন হয় আপনার অতীত আর বর্তমানের। ঘরের দেয়ালের ছবির ফ্রেম যেমন আপনি স্মৃতিকে জড়িয়ে রাখবেন তেমনি আয়নায় প্রতিদিন নিজের প্রতিচ্ছবি দেখে আপনি খুঁজে পাবেন নিজেকে। চমৎকার সব ফ্রেমের আকার ও সেটাপ অনুযায়ী আপনার আয়নাটিও বাছাই করতে হবে, তবেই দেয়ালে ফুঁটে উঠবে স্মৃতির সাথে মুহূর্তের বন্ধন। 

ছোট পরিসরের ঘরকে সুন্দর ও বড় দেখাতে আয়নার ব্যবহার বেশ জনপ্রিয়৷ আয়নায় প্রতিচ্ছবি ঘরকে নিজস্বতা দেয়। আয়নার নকশা আর আয়তনটা নির্ভর করবে কোন ঘরের দেয়ালে তা লাগাচ্ছেন তার ওপর এবং কেমন ধরনের বাজেটে আপনি আয়না কিনছেন সেটাও। ঘরের প্রবেশপথের দেয়ালে ঝুলিয়ে দিতে পারেন আয়তাকার নকশার আয়না৷ ঘরের যেকোনো একটা সুবিধাজনক দেয়ালকে ডেকোরেটিভ করে তুলতে একটা বর্গাকৃতি আয়না ঝুলিয়ে দিন। এর নিচে একটি তাকে মাটির তৈজসপত্র আর গাছ রাখতে পারেন। এ ক্ষেত্রে গাছ রাখতে বাঁশের তৈরি পাত্র ব্যবহার করতে পারেন। এদিকে বসার ঘরের দেয়ালে দেশীয় আয়নাও ভালো লাগবে।

আপনার ঘরের অন্যান্য আসবাব, পরিধি আর নিজের রুচি অনুযায়ী আয়না কিনে খুব সহজেই ঘরকে সাজিয়ে তুলতে পারবেন নিজের মনের আয়নার মত করে।  

বাগানটা হোক বারান্দায়!

বারান্দাভরা গাছ থাকবে, আর সাথে একচিলতে আকাশ- স্বপ্নটা কি খুব বেশি? উঁহু, একদম না। কিন্তু কীভাবে হবে এতোসব? খরচটা সাধ্যের মধ্যে থাকবে তো? এমন নানারকম প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে শুরুতেই ভয় পেয়ে যান অনেকে। আপনার সেই ভয় কাটিয়ে স্বপ্নটাকে সত্যি করতেই আজকের এই আয়োজন!

বারান্দা কি শুধুই গাছের হবে?

বারান্দাকে আপনি সাজিয়ে তুলতে পারেন আপনার মনের মতো করে। টবে গাছ লাগাতে পারেন। মাটির টব, পিতল, তামা বা পছন্দমতো যেকোন টব হতে পারে সেতা। গ্রিলের সাথে পাটের ষিকায় ঝুলন্ত টব রেখে তাতে লাগিয়ে দিতে পারেন নানারকম গাছ। টবগুলো সাধারণত লাল রঙয়ের হয়। তবে টবগুলোকে ইচ্ছে হলে বার্জারের ভিন্ন ভিন্ন রঙয়ের মধ্য থেকে পছন্দসই রঙ বেছে নিয়ে রাঙিয়ে দিতে পারেন। লতানো গাছ লাগিয়ে যদি সেই লতা গ্রিলে উঠিয়ে দেন, তাহলে সেটা লতিয়ে ছড়িয়ে যাবে পুরো বারান্দা। খুব দ্রুত বড় হয় এই লতানো গাছগুলো। তাই, কম সময়েই সবুজে ভরে যাবে আপনার গাছ। যদি বড় কাছ, এই যেমন- কাঠগোলাপের শখ থাকে, তাহলে বারান্দার উচ্চতার উপরে নির্ভর করে বড় একটি টবে এমন কাঠগোলাপ, আম বা পেয়ারার গাছও লাগিয়ে নিতে পারেন। মরিচ বা টমেটো গাছ খুব বেশি জায়গা নেয় না। বড় গাছের টবে লাগিয়ে নিতে পারেন এই ছোট্ট ফলদ গাছ। বারান্দাটা এতে করে হয়ে উঠবে আরও রঙিন। পুদিনা গাছও আজকাল বারান্দার বাগানে বেশ জনপ্রিয়তা কুড়িয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই নানারকম গাছের পাশাপাশি আর কী রাখা যায় বারান্দায়? পাথর

বারান্দার একটা কোনে পাথর আর মাটি জমিয়ে সেখানে কিছু গাছের বীজ ফেলে দিতে পারেন। এই পাথরগুলোকেও ইচ্ছে হলে নানান রঙ-এ রাঙিয়ে দিতে পারেন।

আসবাব

ছোট্ট দুটো চেয়ার, কিংবা একটা টেবিল রাখতে পারেন বারান্দায়। টেবিল আর চেয়ারের নিচে লতানো গাছ তুলে দিতে পারেন। বসার ব্যবস্থাকে আরেকটু আরামদায়ক করে তুলতে কয়েকটি কুশনও রাখতে পারেন বারান্দায়। চেয়ার না রাখতে চাইতে পড়ন্ত বিকেলে এক কাপ গরম চায়ে চুমুক দেওয়ার জন্য ঝুলন্ত দোলনাও রাখতে পারেন।

আলো

দিনের বেলায় নাহয় বারান্দা আলোকিত থাকবে। কিন্তু রাতের বেলা? রাতের জন্য বারান্দায় হালকা আলো লাগিয়ে নিন। নানান রঙয়ের আলো পাওয়া যায় বাজারে। গাছ আর আলো মিলে মায়াময় একটা পরিবেশ তৈরি হবে সহজেই।

বাড়তি কিছু

ইচ্ছে করলে কিছু মাটির পছন্দসই পাত্রে মোম, কৃত্রিম ফুল ইত্যাদি রেখে দিতে পারেন। সাথে যোগ করতে পারেন পানি। আপনার বারান্দার সৌন্দর্য অনেকটা বেড়ে যাবে এতে।

খরচটা কেমন?

বারান্দা কীভাবে সাজাবেন তা নাহয় জানা গেল। কিন্তু খরচটা কেমন হবে? জেনে নিন!

টবের দরদাম

ঘরেই দুধ ও অন্যান্য জিনিসের কৌটা দিয়ে টব বানাতে পারেন আপনি। তাছাড়া, বাজারে নানারকম টব পাবেন আপনি। নার্সারিতে এমন টব সবসময় বিক্রি হয়। মাটির টব, পিতলের টব, প্লাস্টিকের টব, তামার টব- টব আছে হরেকরকম। টবের উপাদানভেদে এর দামটাও কম-বেশি হবে। প্লাস্টিকের ছোট টবগুলো ২০-৫০ টাকায় পাবেন আপনি। এগুলোর মধ্যে চাইলে ঝুলন্ত টবও বেছে নিতে পারেন। এছাড়া অন্যান্য টবগুলোও (ছোট, বড় ও মাঝারী) সাধারণত ১২০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে পাবেন আপনি।

গাছের দাম

গাছের প্রজাতিভেদে এর দাম ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। সাধারণত, গাছগুলোর দাম ২০-১০০ টাকা হয়ে থাকে। লতাজাতীয় গাছের দাম ২০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। কোন বড় গাছের কলম নিতে গেলে আপনাকে ২০০-৫০০ টাকা খরচ করতে হতে পারে।

আর রঙয়ের জন্য কমদামে মানসম্পন্ন রঙ পেতে পারেন আপনি বার্জারেই!

কোথায় পাবেন?

গাছ, গাছের টব এবং অন্যান্য সরঞ্জাম আপনি হাতের কাছের যেকোন নার্সারিতেই পাবেন। তবে ভালোমানের গাছ এবং টব বেছে নিতে চলে যান ঢাকা কলেজ, কার্জন হল ইত্যাদি স্থানে। কলাবাগান, ধানমন্ডি, বকশি বাজার, আবাহনী মাঠের উলটো পাশ ইত্যাদি স্থানেও হরেকরকম গাছ এবং টবের পশরা পাবেন আপনি। নুড়ি পাথর খুঁজলে বাড়ির আশপাশ থেকেই বেছে নিতে পারবেন আপনি। এজন্য আলাদা কোন খরচের দরকার পড়বে না।

মনে রাখবেন

১। গাছের টবের নিচে যেন পানি এবং বাতাস চলাচলের জন্য ছিদ্র থাকে। এতে করে পানি জমে সেখান থেকে মশা এবং অন্যান্য পোকামাকড়ের জন্ম হবে না।

২। কিছু গাছ মাটি এবং পানিতে বাঁচে। কিছু গাছ শুধু পানিতে বা মাটিতে বাঁচে। কোন গাছটি বেছে নিচ্ছেন এবং সেটার জন্য কেমন পরিবেশ ভালো সেটা নিশ্চিত হয়ে নিন।

৩। আপনার বারান্দায় যথেষ্ট আলো আছে কিনা তা নিশ্চিত করুন।

৪। কিছুদিন পরপর টবের স্থান বদলে দিন। এতে করে গাছের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।

একটু হয়তো খরচ হবে, কিছুটা সময়ও লাগবে। তবে বারান্দায় বাগান করতে চাইলে এটুকু করার জন্য নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করুন। গাছের সবচাইতে বেশি দরকার পড়ে যত্নের। তাই, নিয়মিত বারান্দার গাছগুলোর যত্ন নিন। কয়েকমাস পর ফলাফল দেখে চমকে যাবেন আপনি!

কোন দেয়ালে মানাবে কেমন পর্দা?

ঘরের সৌন্দর্য রক্ষা কিংবা গোপনীয়তা, পর্দা ছাড়া ঘর সাজানো যেন অপূর্ণই রয়ে যায়। আর সেই পর্দা যদি হয় ঘরের দেয়ালের সাথে মানানসই, তবে তো কথাই নেই! আপনার সাজানো-গোছানো স্বপ্নের সেই ঘরটি যেন আরও আপন হয়ে ওঠে প্রতিনিয়তই। যেখানে আপনি কাটাতে পারেন শান্তির কিছু মুহূর্ত একদম নিজের মতো করে; নিশ্চিন্তে, নিরালায়।

তো বাজারের হরেক রঙের পর্দার ভিড়ে, কোনটা যে আপনার ঘরের দেয়ালে মানাবে, আর কোনটা দেখাবে বেমানান, এই নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন? বিষয়টা কিছুটা জটিল মনে হলেও, অতটা জটিল কিন্তু নয়! শুধু একটু হিসাব মিলিয়ে নিলেই কিন্তু দেয়ালে পর্দা সাজবে একদম মনের মতো করে!

প্রথমে শুরু করছি বসার ঘর বা ড্রয়িং রুমের দেয়ালটি দিয়ে, ছিমছাম এই ঘরটির দেয়াল সাজানো চাই এমন পর্দা দিয়ে যা আপনার ঘরকে রাখবে আলোকিত এবং উজ্জ্বল। ঘরের আসবাবপত্রের ভিড়ে রুমটি যেন অন্ধকার না দেখায়, সেজন্য হালকা রঙের পাতলা পর্দাই হবে এই রুমের দেয়ালের জন্য মানানসই। এক্ষেত্রে সাদা কিংবা অফ-হোয়াইট রঙের সিনথেটিক কাপড়ের পর্দা বেছে নেওয়া যেতে পারে। তবে দেয়ালের সাথে পর্দার রঙ যেন হুবুহু মিলে না যায় সেই বিষয়টিও বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন।   

এবার আসি খাবার ঘরের কথায়, এই ঘরের দেয়ালের জন্য উজ্জ্বল রঙের পর্দা বেছে নিতে পারেন। সাধারণত খাবার ঘরটি থাকে রান্নাঘরের পাশে, আর এই রুমে যদি রোদের তাপের আনাগোনা বেশি থাকে, তবে শান্তিমতো আহার করা সম্ভব হবে না। তাই দেয়ালের আকৃতি এবং রঙ বুঝে বাদামী, লালচে কমলা, মেরুন কিংবা চকোলেট রঙের প্রিন্টের পর্দাও কিন্তু খারাপ দেখাবে না ডাইনিং রুমের দেয়ালে।

বাসার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রুমটি হলো শোবার ঘর। সারাদিনের ক্লান্তি যেন এক নিমিষেই চলে যায় শোবার ঘরে প্রবেশের সাথে সাথে। আর তাই শোবার ঘরের দেয়ালের জন্য চাই কিছুটা ভারী, তবে সুতি কাপড়ের পর্দা। ঘরে একদিকে যেমন বাতাস ঢোকা চাই, তেমনি গোপনীয়তা রক্ষাও পাবে সমান গুরুত্ব। তাই পর্দা বাছাইয়ে হালকা গোলাপি, সবুজ, আকাশী কিংবা পিচ রঙ হতে পারে পর্দার জন্য পারফেক্ট।

এক্ষেত্রে দুই স্তরের পর্দাও ব্যবহার করতে পারেন। সামনে কিছুটা মোটা ধরনের কাপড়ের পর্দা ঝুলিয়ে তার পিছনে ভিন্ন রঙের নেটের পর্দা টাঙিয়ে দিলে ঘরটি দেখতে আরও সুন্দর দেখাবে। সাধারণত নেটের পর্দা সাদা রঙের হলেই তা দেখতে সুন্দর দেখায়। তবে অফ হোয়াইট, বাসার সবচেয়ে ছিমছাম এই রুমটিতে যেন শান্তি এনে দিয়ে নেটের এই পর্দা। একদিকে যেমন রুমের গোপনীয়তা বজায় রাখবে, অন্যদিকে রুমে আলো-বাতাসের সুব্যবস্থাও করে দিবে।

চাইলে নেটের পর্দাটি দুই পাশে বেল্ট দিয়ে হালকা করে বেঁধেও রাখতে পারবেন, এতে করে রুমে কিছুটা ভিন্নতাও আসবে, সাথে বাতাসের প্রবেশ তো থাকছেই। 

অন্যদিকে, বাচ্চাদের ঘরের দেয়ালের জন্য পর্দা হওয়া চাই উজ্জ্বল রঙের। কার্টুন প্রিন্টেড পর্দা দেখে বাচ্চারা যেমন খুশি হয়ে যাবে, তেমনি শৈশবের এই সময়টাও হয়ে উঠবে আরও প্রাণবন্ত।

তবে দেয়ালের জন্য পর্দা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আরও যে বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে, তা হলো ঘরের রঙ এবং আকৃতি। দেয়ালের রঙ এবং পর্দা যেন কখনোই একই রঙের না হয় এই বিষয়টি বিশেষ নজরে রাখতে হবে। ঘরের আকৃতি যদি ছোট হয় এবং আসবাবপত্রের সংখ্যাও যদি বেশি হয়ে থাকে, তবে গাঢ় রঙের প্রিন্টের পর্দা বেছে না নিয়ে, হালকা এক রঙের পর্দা বেছে নিতে পারেন।

কোথায় পাবেন পর্দা?   

ঢাকার মধ্যে নিউমার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড, মোহাম্মদপুর, রোকেয়া সরণি, গুলশান, মিরপুর ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় পাওয়া যাবে পর্দার বিশাল সংগ্রহ। আপনি চাইলে পছন্দমতো কাপড় কিনে লেইস, বোতাম দিয়ে ডিজাইন করে বানিয়ে নিতে পারেন রুমের জন্য মানানসই পর্দা। এক্ষেত্রে পর্দার সঠিক মাপ জেনে নেওয়া জরুরি।

কাপড়ভেদে পর্দা প্রতি পিস ৮০০-৯০০ থেকে শুরু করে ২,৫০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। আর গজ হিসেবে কিনতে চাইলে গজ প্রতি ৪০০-৪৫০ থেকে ১ হাজার ২০০-৫০০ টাকা পর্যন্ত পড়তে পারে।

অন্যদিকে টারসেলের দাম পড়বে ৩০০ থেকে ১ হাজার টাকা এবং টারসেল স্ট্যান্ডের দাম পড়বে ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা। সুতি অথবা খাদি কাপড়ের এসব পর্দায় ব্লক, বাটিক অথবা হাতের কাজ করা থাকে। প্রতিটির দাম পড়বে ১ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা।

হোম টেক্স প্রতিটি পর্দার দাম পড়বে ৬৫০-৪৯০০ টাকার মধ্যে। অন্যদিকে কে ক্রাফট, অঞ্জন’স কিংবা আড়ং-এ প্রতিটি পর্দার দাম পড়বে ৭০০-১৬০০ টাকার মধ্যে, যদিও ডিজাইন এবং কাপড় ভেদে এই দামের তারতম্য দেখা দিতে পারে।  

তবে আপনি যদি একটু কম খরচের মধ্যে কাপড় কিনে নিজেই পছন্দমতো ডিজাইন অনুযায়ী পর্দা বানিয়ে নিতে চান, তবে এর জন্য পারফেক্ট জায়গা হবে নিউমার্কেট। এখানে আপনি অনেক ধরনের গজ কাপড়ের সন্ধান পাবেন। সুতি চেক কিংবা শেডের কাপড় থেকে শুরু করে সিনথেটিক, নেট এমনকি বিভিন্ন প্রিন্টের কাপড়ের দেখা মিলবে নিউমার্কেটে। যার দাম ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে ২৫০০ বা তার বেশিও হতে পারে। এক্ষেত্রে কিছুটা দরদাম করেই কাপড় কিনতে হবে। ভালো হয় যদি আগেভাগেই আপনি জেনে নিতে পারেন যেকোনো কাপড়ের দাম কেমন হতে পারে, তবে যাচাই-বাছাই করে কাপড় কিনতে সুবিধা হবে। 

Search products
Back to Top
Product has been added to your cart
Compare (0)