সহজে ঘর সাজান, এই ৭টি ইন্ডোর প্লান্ট দিয়ে

ঘর সাজাতে ইন্ডোর প্লান্টের জুড়ি মেলা ভার। আসবাব যেমনই হোক, ঘরের এক কোনে একটি গাছ রাখুন- শোভা বাড়বে। আসলে গাছই তো সবচেয়ে সুন্দর শিল্পকলা।

তবে শুধু শোভা বৃদ্ধিই নয়, ঘরে গাছ রাখলে মুডও থাকবে ভাল। বিশেষ করে শহরের ফ্ল্যাটবাড়িতে প্রকৃতিকে অনেকেই মিস করেন। সেখানে একটি গাছের ছোঁয়াই সুন্দর করে তুলবে আপনার দিন।

ইন্ডোর প্লান্ট নিয়ে অনেকেই ভয় পান। প্রথমেই ভাবেন অনেক দাম হবে। তারপর ভাবেন যে ভীষণ যত্ন করতে হবে। তবে এমনটা কিন্তু একেবারেই নয়।

এই লিস্টে পাবেন ৭টি সবচেয়ে সহজ ইন্ডোর প্লান্টের উদাহরণ। একটি বাদে সবকটিই ডাল কেটে পুঁতলেই হয়। আর বেশি যত্নেরও প্রয়োজন নেই।

খালি মনে রাখা প্রয়োজন যে ইন্ডোর প্লান্ট হলেও গাছের সালোকসংশ্লেষের জন্য আলো প্রয়োজন। তাই চেষ্টা করুন দক্ষিণ, পূর্ব বা পশ্চিমের রোদ আসে এমন জানলার পাশে রাখার।

তাছাড়া একই জাতের দুটি টব করুন। একটি বারান্দায় রাখুন। একটি ঘরে। ঘরে একটানা ৩ দিন পর দুটি গাছের স্থান অদলবদল করে নিন। বাইরের রোদ-আলো পেলে গাছের বৃদ্ধি ভাল হবে। পাতার উপরের ধুলোর আস্তরণ মাঝে মাঝে পানি দিয়ে ধুয়ে দেবেন। গাছ সতেজ থাকবে।

মাটি শুকিয়ে গেলে তবেই পানি দিন। অতিরিক্ত পানি দেবেন না। আবার গাছ নেতিয়ে পড়া পর্যন্তও অপেক্ষা করবেন না।

কোথাও বেড়াতে গেলে ১ সপ্তাহের জন্য খুব ভয়ের কিছু নেই। যাওয়ার আগে ভাল করে পানি দিয়ে যাবেন। সরাসরি রোদে রাখবেন না। অল্প আলোয়, বারান্দায় রাখবেন। আর বাড়ি ফিরেই পানি দিয়ে দেবেন।

ইন্ডোর প্লান্টের জন্য খুব বেশি কিছু সারের প্রয়োজন নেই। তবে মাঝে মাঝে বাজারচলতি কোনও সার দিতে পারেন। পরিমাণে সামান্য দেবেন। নয় তো পাতা জ্বলে যাবে।

যে কেউ করতে পারবেন এমন ৭টি ইন্ডোর প্লান্ট :

১. মানি প্লান্ট (Money Plant/ Pothos)

হয় তো ভাবছেন এ আর এমন কী গাছ! আসলে সেই জন্যই এই নাম রাখা। কারণ মানি প্লান্ট করা বেশ সহজ। আর ঠিকভাবে যত্ন নিলে মানি প্লান্টের সৌন্দর্য্য অনেক দামি গাছকেও হার মানায়।

বিভিন্নভাবে করতে পারেন মানিপ্লান্ট। ছোট টবে করে বারান্দায় হ্যাঙ্গিং প্লান্ট হিসাবে করতে পারেন। আবার বড় টবের মাঝে একটি লাঠি পুঁতে নিতে পারেন। সেটি বেয়ে বেয়ে মানিপ্লান্ট বাড়বে। আবার ছোট বাহারি টবেও করতে পারেন। বুক সেলফ বা টেবিলের এক কোনে রাখবেন।

একটু খোঁজ নিলেই কোনও বাগানপ্রেমী বন্ধুর থেকে কাটিং পাবেন।

বসানোর সময়ে মাঝারি টবে অন্তত ৭-৮টি কাটিং বসাবেন। আর মাঝে মাঝে ট্রিমিং করবেন। ঘন হবে।

২. সানসাভেরিয়া (Sansaveria)

ইদানিং ইন্টিরিয়র ডেকরেশনের বাজারে খুব জনপ্রিয় সানসাভেরিয়া। Mother-in-Law’s Tounge নামেও পরিচিত। খুবই হার্ডি গাছ। এক সপ্তাহ পানি দিতে ভুলে গেলেও কোনও সমস্যা নেই। আর বেশ অন্যরকম দেখতে।

বিভিন্ন জাতের সানসাভেরিয়া হয়। হলুদ বর্ডার, কালচে সবুজ পাতার গাছটি সাদা বা লাল টবে সত্যিই খুব সুন্দর দেখায়।

গোড়া থেকে চারা বের হয়। সেটা তুলে বসালেই গাছ হবে। অনেকে গোটা পাতা কেটে বসান। তবে সেটায় অনেক সময় লাগে।

৩. ড্রাসিনা (Dracena)

এই গাছটি অনেকেই বাগানে করেন। ইন্ডোর প্লান্ট হিসাবেও বেশ ভাল। তবে মাটি বেশিদিন যাতে শুকিয়ে না যায় সেদিকে নজর রাখবেন। মাটি শুকিয়ে গেলে পাতা ঝড়ে যায়। তবে, পানি দিলেই আবার সতেজ হয়ে ওঠে।

ডাল কেটে মাটিতে পুঁতে দিলেই নতুন গাছ হবে। গাছের প্রধান ডাল কেটে দিলেই নতুন শাখা বের হয়।

৪. এরিকা পাম (Erica Palm)

বাংলাদেশে যদি সবচেয়ে জনপ্রিয় ইন্ডোর প্লান্টের তালিকা করা হয়, তার মধ্যে প্রথম দশে অবশ্যই এরিকা পামের নাম থাকবে।

যে কোনও নার্সারিতেই পাবেন এরিকা পাম। দামও খুব বেশি নয়। খুব বেশি যত্নেরও প্রয়োজন নেই। টবে পানি না বসলেই হল।

তবে অন্যান্যগুলির তুলনায় এটি একটু বেশি রোজ পছন্দ করেন। তাই জানলার ধারে বা বারান্দায় রাখলে সবচেয়ে ভাল। অথবা সপ্তাহে ২ দিন ঘরে রেখে বাকি ৫ দিন বারান্দা বা বাগানে রাখতে পারেন।

এই গাছটি যেহেতু একটু লম্বা হয়, তাই খাট বা সোফার পাশে, ঘরের এক কোনে দেখতে বেশ সুন্দর লাগে।

৫. মনস্টেরা (Monstera)

২০২০-২১-এ সবচেয়ে জনপ্রিয় ইন্ডোর প্লান্ট কী জানেন? মনস্টেরা। বড় বড় পাতার এই গাছ এখন ইন্টিরিয়ার ডিজাইনারদের প্রথম পছন্দ।

মানিপ্লান্টের মতো ডাল কেটে বসালেই এই গাছ হয়। বাগানপ্রেমী কাউকে ছবি পাঠিয়ে জিজ্ঞাসা করতে পারেন এর বিষয়ে। কাটিং পেয়ে যাবেন।

কাটিং বসানোর পর কয়েকদিন ছায়ায় রাখবেন। মাটি ভিজে ভিজে রাখবেন।

তবে মনস্টেরা বড় হতে একটু সময় লাগে। প্রথম ৫-৬টা পাতায় কোনও বিন্যাস বা নকশা থাকে না। একটু বড় হলে তখন দেখা যায় তার আসল রূপ। তাই একটু ধৈর্য্য ধরতে হবে।

৬. কোলিয়াস (Coleus)

সবুজ বাদ দিয়ে একটু অন্যরকম রঙ চাই? তাহলে তাহলে এটাই সেরা চয়েস।

ডাল কেটে বসালেই হবে। তবে একটা টবে ৪-৫ টি অন্তত কাটিং বসাবেন। নিয়মিত পানি দিলেই গাছ ধরে যাবে।

কোলিয়াসের ক্ষেত্রে নিয়মিত ডগা ছাঁটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তবেই গাছ ঘন ও সুন্দর হবে। ডগার পাতা না ছাঁটলে গাছ বেশি লম্বা হয়ে যাবে। পাতার সংখ্যাও কম হবে।

এই গাছের ডাল খুব নরম। তাই একটু সাবধানে হ্যান্ডেল করতে হয়। গোড়ায় যাতে পানি না বসে সেদিকে নজর রাখতে হবে।

৭. রবার প্লান্ট (Rubber Plant)


ইন্ডোর প্লান্ট হিসাবে রাবার প্লান্টের জনপ্রিয়তা নতুন নয়। একটু বড় ঘর হলে ও প্রচুর আলো বাতাস থাকলে এই গাছ পারফেক্ট। বারান্দাতেও করতে পারেন। খুবই হার্ডি গাছ। 

ডাল কেটে বসালেও হয়। তবে নার্সারি থেকে একটু হরমোন পাউডার কিনে নেবেন। সেটি ডালের কাটা স্থানে লাগিয়ে বসাবেন। মাটি অল্প ভিজে রাখবেন।

রবার গাছের বিভিন্ন ভ্যারাইটি হয়। কালচে পাতা, লাল দাগসহ পাতা ইত্যাদি।

উপরের লিস্টের কোন গাছ আপনার বাড়িতে আছে? কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আর কাটিংয়ের আবদারটাও তাড়াতাড়ি সেরে ফেলুন। বাগানপ্রেমী বন্ধু বা আত্মীয়র সঙ্গে শেয়ার করুন ।

আমরা এই গাছ গুলো বিক্রি করছিনা এখনো । অনেকেই আমাদের কাছে জানতে চান তাদের জন্য আমাদের এই পোস্ট । 

Add a review

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Search products
Back to Top
Product has been added to your cart
Compare (0)